সর্বজনীন পেনশন স্কিম
সর্বজনীন পেনশন স্কিম
⇨ ২০২৩ সালের ২৪ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে "সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল -২০২৩" পাস হয়
⇨ এই স্কিমে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী কোনো নাগরিক যদি মাসে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা জমা করেন, তাহলে তার বয় ৬০ বছর পার হলেই সরকার তাকে প্রতি মাসে পেনশন দিবে ৩২ হাজার টাকা। এই সুবিধাটি ৮০ বছর পর্যন্ত বহাল থাকবে। আর জমানো অর্থের পরিমাণ প্রতি মাসে ১০০০ টাকা হলে ৬০ বছর পর প্রতি মাসে তিনি ৬৪ হাজার টাকা পাবেন। যা ৮০ বচর পর্যন্ত বহাল থাকবে।
#৫০ বৎসর ঊর্ধ্ব বসয়ী নাগরিকদের পেনশন সুবিধা
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল -২০২৩ এর ১৪(১)(ক) ধারা অনুযায়ী,
বিশেষ বিবেচনায় ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর ঊর্ধ্ব বয়সের নাগরিকগণও সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারবে এবং সেইক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ হতে নিরবচ্ছিন্ন ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন সেই বয়স হইতে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন।
#সর্বনিম্ন কত বছর সরকারি তহবিলে টাকা জমা করতে হবে?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থপানা আইন ২০২৩ এর ১৪(১)(খ) ধারা অনুযায়ী, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তির পর একজন চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান-সাপেক্ষে মাসিক পেনশন পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন এবং চাঁদাদাতার বয়স ৬০ (ষাট) বৎসর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন প্রদান করা হবে।
# বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীগণ এই পেনশন ব্যবস্থাপনায় অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪(১)(গ) ধারা অনুযায়ী, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীগণ এই কর্মসূচিতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত হইতে পারিবেন;
# এই স্কিমে অংশগ্রহণ সবার জন্য বাধ্যতামূলক নাকি স্বেচ্ছাধাীন?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪(১)(ঘ) ধারা অনুযায়ী, সরকার কর্তৃক বাধ্যতামূলক করে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত, প্রাথমিকভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি স্বেচ্ছাধীন থাকবে।
# স্কিমে কত সময় পরপর চাঁদা প্রদান করতে হবে?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪(১)(জ) ধারা অনুযায়ী, মাসিক অথবা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা প্রদান করা যাইবে এবং অগ্রিম ও কিস্তিতে জমা প্রদানের সুযোগ থাকিবে;
# মাসিক চাদা প্রদানে বিলম্ব হলে করণীয় কী?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪(১)(ঝ) ধারা অনুযায়ী, মাসিক চাঁদা প্রদানে বিলম্ব হইলে, বিলম্ব ফিসহ বকেয়া চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে পেনশন হিসাব সচল রাখা যাইবে এবং উক্ত বিলম্ব ফি চাঁদাদাতার নিজ হিসাবে জমা হইবে;
# একজন চাঁদাদাতা কতদিন পর্যন্ত পেনশন সুবিধা পাবে?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪(১)(ঞ) ধারা অনুযায়ী, পেনশনারগণ আজীবন অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পেনশন সুবিধা ভোগ করিবেন;
# পেনশন চলাকালীন ৭৫ বৎসর বয়সের আগে মারা গেলে পেনদাতা কিবাবে টাকা পাবেন?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪(১)(ট) ধারা অনুযায়ী, পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ (পঁচাত্তর) বৎসর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে পেনশনারের নমিনি অবশিষ্ট সময়কালের (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ (পঁচাত্তর) বৎসর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন;
# চাঁদাদাতা কমপক্ষে দশ বৎসর চাঁদা প্রদান করার পূর্বেই মূত্যবরণ করলে সে কিভাবে টাকা পাবে?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪(১)(ঠ) ধারা অনুযায়ী, চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান করিবার পূর্বে মৃত্যুবরণ করিলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তাহার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হইবে;
# পেনশন তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন উত্তোলন করা কি সম্ভব?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪(১)(ড) ধারা অনুযায়ী, পেনশন তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন উত্তোলনের প্রয়োজন হইলে, চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমাকৃত অর্থের সর্ব্বোচ্চ ৫০ (পঞ্চাশ) শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাইবে, যাহা ধার্যকৃত ফিসহ পরিশোধ করিতে হইবে এবং ফিসহ পরিশোধিত অর্থ চাঁদাদাতার নিজ হিসাবে জমা হইবে;
# পেনশন হিসেবে প্রাপ্ত অর্থ আয়করের অন্তর্ভুক্ত নাকি আয়করমুক্ত?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪(১)(ঢ) ধারা অনুযায়ী, পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করিয়া কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হইবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকিবে;
# নিম্ন আয়সীমার নাগরিকগণ অথবা অস্বচ্ছল চাঁদাদাতাগণ যারা একসময় চাঁদা প্রদান করতো কিন্তু অস্বচ্ছলতার কারণে চাঁদাপ্রদানে অসমর্থ তাদের জমাকৃত টাকা তারা কি ফেরত পাবে?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪(১)(ণ)ধারা অনুযায়ী, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রজ্ঞাপন জারি হওয়া সাপেক্ষে, নিম্ন আয়সীমার নিচের নাগরিকগণের অথবা অস্বচ্ছল চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসাবে প্রদান করিতে পারিবে।
# সর্বজনীন এই পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি অথবা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করিতে পারবে কি না?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪(২) ধারা অনুযায়ী, সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি অথবা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করিতে পারিবে এবং এইক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে;
তবে শর্ত থাকে যে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত, সরকারি ও আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীগণ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতা-বহির্ভূত থাকিবে।
# একজন পেনশনার কিভাবে পেনশনের অর্থ পাবে?
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ২১ ধারা অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষ ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার প্রক্রিয়ায় মাসিক পেনশন পেনশনারের নিকট নির্দিষ্ট সময়ে পৌছানো নিশ্চিত করিবে এবং এই উদ্দেশ্যে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের আওতাধীন একটি কেন্দ্রীভূত ও স্বয়ংক্রিয় পেনশন বিতরণ পরিকাঠামো গঠন করা হইবে।
Comments