বিরাম বা যতি চিহ্ন
বিরাম ও যতি চিহ্ন
কমা বা পাদচ্ছেদ (,)
* বাক্য পাঠকালে সুস্পষ্টতা বা অর্থ-বিভাগ দেখাবার জন্য যেখানে স্বল্প বিরতির প্রয়োজন, সেখানে কমা বসাতে হয়।
উদাহরণঃ সুখ চাও, সুক পাবে পরিশ্রমে।
* পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত একাধিক বিশেষ্য বা বিশেষণ পদ এক সঙ্গে বসলে শেষ পদটি ছাড়া বাকি সবগুলোর পরই কমা বসাতে হয়।
উদাহরণঃ সুখ, দুঃখ, আশা, নেরাশ্য একই মালিকার পুষ্প।
* সম্বোধন পদের পর কমা বসাতে হয়।
উদাহরণঃ রশিদ, এখানে আসো।
* মাসের তারিখ লিখতে বার ও মাসের পরে কমা লিখতে হয়।
উদাহরণঃ ১৬ই পোষ, বুধবার, ১৩৯০ বঙ্গাব্দ।
* খন্ড ব্যাক্যের শেষে উদ্ধরণ চিহ্নের পূর্বে কমা বসাতে হয়।
উদাহরণঃ অধ্যক্ষ বললেন, "ছুটি পাবেন না।"
* বাড়ি বা রাস্তার নম্বরের পরে কমা বসাতে হয়।
উদাহরণঃ ৬৫, নবাবপুর রোড, ঢাকা।
* শব্দ, বর্গ ও অধীন বাক্যকে আলাদা করতে কমা বসাতে হয়।
সেমিকোলন (;)
* কমা অপেক্ষা বেশি বিরতির প্রয়োজন হলে সেমিকোলন বসে।
* একাধিক স্বাধীন বাক্যকে একটি বাক্যে লিখলে সেগুলোর মাঝখানে সেমিকোলন বসে।
উদাহরণঃ
⇨ সংসারের মায়াজালে আবদ্ধ আমরা; সে মায়ার বাঁধন কি সত্যিই দুশ্ছেদ্য?
দাড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ (।)
বাক্যের পরিসমাপ্তি বোঝাতে দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?)
* বাক্যে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হলে বাক্যের শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন বসে।
উদাহরণঃ
⇨ তুমি কখন এলে?
বিস্ময় ও সম্বোধন চিহ্ন (!)
* হৃদয়াবেগ প্রকাশ করতে হলে এবং সম্বোধন পদের পরে বিস্ময় ও সম্বোধন চিহ্ন বসে।
উদাহরণঃ
⇨ আহা! কি চমৎকার দৃশ্য।
কোলন (ঃ)
* একটি অপূর্ণ বাক্যের পর অন্য একটি বাক্যের অবতারণা করতে হলে কোলন বসে।
উদাহরণঃ
⇨ সভায় সাব্যস্ত হলোঃ এক মাস পরে নতুন সভাপতি নিট্বাচিত করা হবে।
ড্যাস চিহ্ন (-)
* যৌগিক ও মিশ্র বাক্য পৃথক ভাবাপন্ন দুই বা তার বেশি বাক্যের সমন্বয় বা সংযোগ বোঝাতে ড্যাস চিহ্ন বসে।
* কোনো কথার দৃষ্টান্ত বা বিস্তার বোঝাতে ড্যাস চিহ্ন বসে।
উদাহরণঃ
⇨ তোমরা দরিদ্রের উপকার কর - এতে তোমাদের সম্মান যাবে না - বাড়বে।
কোলন ড্যাস (ঃ-)
* উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত প্রয়োগ করতে হলে কোলন এবং ড্যাস চিহ্ন একসাথে ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণঃ
⇨ বর্ণ দুই প্রকার। যথাঃ- স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ
হাইফেন বা সংযোগ চিহ্ন (–)
* সমাসবদ্ধ পদের অংশগুলো বিচ্ছিন্ন করে দেখাবার জন্য হাইফেনের ব্যবহার হয়।
* দুই শব্দের সংযোগ বোঝাতে হাইফেন ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণঃ
⇨ এ আমাদের শ্রদ্ধা-অভিনন্দন, আমাদের প্রীতি-উপহার।
প্রথম বন্ধনি ()
* প্রথম বন্ধনি বিশেষ ব্যাখ্যামূলক অর্থে সাহিত্যে ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণঃ
⇨ ত্রিপুরায় (বর্তমানে কুমিলা) তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
উদ্ধরণ চিহ্ন (" ")
* বক্তার প্রত্যক্ষ উক্তিকে উদ্ধরণ চিহ্নের অন্তর্ভুক্ত করতে হয়।
উদাহরণঃ
⇨ গতকাল " বাংলা ২য় পত্র" বিটি প্রকাশিত হয়েছে।
ইলেক বা লোপ চিহ্ন (')
* কোনো বর্ণ বিশেষের লোপ বোঝাতে বিলুপ্ত বর্ণের জন্য লোপচিহ্ন দেয়া হয়।
উদাহরণঃ
⇨ মাথার 'পরে জ্বলছে রবি।
যতিচিহ্ন সমূহের বিরতি কালঃ
১) কমা এর বিরতি কাল ⇨ ১ বলতে যে সময় প্রয়োজন
২) সেমিকোলন এর বিরতিকাল ⇨ ১ বলার দ্বিগুণ সময়
৩) দাঁড়ি বা পূর্ণচ্চেদ এর বিরতিকাল ⇨ এক সেকেন্ড
৪) প্রশ্নবোধক চিহ্ন এর বিরতিকাল ⇨ এক সেকেন্ড
৫) বিস্ময় চিহ্ন এর বিরতিকাল ⇨ এক সেকেন্ড
৬) কোলন এর বিরতিকাল ⇨ এক সেকেন্ড
৭) কোলন ড্যাস এর বিরতিকাল ⇨ এক সেকেন্ড
৮) ড্যাস এর বিরতিকাল ⇨ এক সেকেন্ড
৯) উদ্ধরণ চিহ্ন এর বিরতিকাল ⇨ এক উচ্চারণে যে সময় লাগে
১০) ইলেক বা লোপ চিহ্ন এর বিরতিকাল ⇨ থামার প্রয়োজম্ন নেই।
১১) হাইফেন এর বিরতিকাল ⇨ থামার প্রয়োজন নেই
১২) বন্ধনী এর বিরতিকাল ⇨ থামার প্রয়োজন নেই
* বাক্যের অভ্যন্তরে বসে ⇨ কমা, সেমিকোলন, ড্যাস (৩টি)
* বাক্যের প্রান্তে বসে ⇨ দাঁড়ি, প্রশ্নবোধক চিহ্ন, বিস্ময়চিহ্ন (৩টি)
Comments